গত ১৫ বছরের বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে নন্দিত ও নিন্দিত ব্যক্তিত্ব। তাকে আইরন লেডিও বলা হয়। দিনরাত তাকে গালি দিলেও তার মুখে কিছু সান্ত্বনা শুনে আমরা বলি, "আরে! নেত্রীকে তো ভুল বোঝানো হচ্ছে!" নামের আগে মাননীয় বলতেও ভুলি না। তিনি একই সাথে মানবতা, কওমী - সবার মা। এখন সম্ভবত ক্রীড়া ও শিক্ষারও মা।
কিন্তু আসলে কেমন মানুষ শেখ হাসিনা? তাই ফুটে উঠেছে আমার ফাঁসি চাই বইয়ে। শেখ হাসিনার সত্যিকার জীবন নিয়ে অনবদ্য এ বইটির লেখক মতিউর রহমান রেন্টু। কে এই রেন্টু?
মতিউর রহমান রেন্টু একজন মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর তিনিও বঙ্গবীরের সাথে অস্ত্র হাতে তুলে নেন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা রাজনীতিতে যোগ দিলে তিনি তার পিএসের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে সারসংক্ষেপ দিয়েছেন রেন্টু নিজেই।
আমার, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই শিরোনামে তিনি লিখেনঃ
"ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ডের ক্রমওয়েল রাজতন্ত্রের ক্ষমতা লোপ করে নিজেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন স্বৈরাচারী হয়েছিলেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের গণতান্ত্রিক জনতা তাকে ক্ষমা করেনি। দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হয়ে ছিল তার মৃত্যুর পর। এই বিচার প্রিভি কাউন্সিল পর্যন্ত গড়িয়েছিল এবং তার ফাঁসি হয়েছিল। কবর থেকে তার হাড়গোর তুলে ফাসি কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছিল। এটাই হল আইনের শাসন।
‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট শেখ হত্যার প্রতিবাদে যুদ্ধ করে দেশের যে ক্ষতি করেছি, সেই অপরাধে আমার ফাঁসি চাই।তবে তার আগে এই শিরোনামে তিনি লিখেনঃ
স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা জেনেও তা প্রকাশ না করার এবং হত্যাকারীদের সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে আমার ফাঁসি চাই।
‘৮৩-এর মধ্য ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জয়নাল ও জাফর এবং ‘৮৪-এর ফেব্রুয়ারী সেলিম ও দেলোয়ার হত্যায় শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়ে যে অপরাধ করেছি তার জন্য আমার ফাঁসি চাই।
‘৯২ ডিসেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পন্ড করার জন্য শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশে হিন্দু-মুসলমান রায়ট লাগিয়ে যে অপরাধ করেছি তার জন্য আমার ফাঁসি চাই।
১৯৯২ সালের পর থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে শেখ হাসিনার নীল নক্সা ও নির্দেশে যে ১০৩ (এক শত তিন জন) জন লোক নিহত হয়, এই অজ্ঞাতনামা ১০৩ জন মানুষ হত্যার দায়ে আমার ফাঁসি চাই।
তবে তার আগে
১। সম্পূর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না করায়, আমাদের স্বাধীনতার জন্য নিহত (শহীদ) হতে হয় এবং দুই লক্ষ মা, বোনকে ধর্ষিত হতে হয়। এই ত্রিশ লক্ষ মানুষ হত্যাএবং দুই লক্ষ নারী ধর্ষিত হওয়ার জন্য দায়ী শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
২। মুক্তি যুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার অভিযোগে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
৩।
যে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এবং দেশ স্বাধীন করে শেখ মুজিবর রহমানকে স্বাধীন দেশে ফিরিয়ে এনেছে, স্বাধীনতার পর ভারত থেকে সেই প্রকৃতমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা না এনে, রাজকার আলবদরসহ ভূয়া ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ (সার্টিফিকেট) দেওয়ার অভিযোগে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
৪। ক্ষমা না চাইতেই স্বাধীনতা বিরোধি রাজাকার আল বদরদের ঢালাও ভাবে ক্ষমা ঘোষণা করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর শাস্তি চাই।
৫। মহান বিপ্লবী নেতা কমরেড সিরাজ সিকদারকে বন্দি অবস্থায় বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
৬। সিরাজ শিকদারকে খুন করে পবিত্র পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আজ কোথায় সিরাজ সিকদার বলে দম্ভোক্তি করে পবিত্র পার্লামেন্টকে অপবিত্র করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
৭। জনগনের ভোট দেয়ার অধিকার, মিছিল করার অধিকার, দল করার অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণসহ সংবিধানের মৌলিক অধিকার হরণ করে জাতির উপর একদলীয় (বাকশাল) শাষণ শোষণ চাপিয়ে দেয়ার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
ক। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ মুজিবর রহমান নিহত হওয়ার পর অনেক চেষ্ট এবং কষ্টের পর শিক্ষিত ছাত্র যুবকদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনার ধারার সূচনা হয়েছিল। ছাত্র যুবকরা ভাবতে শুরু করেছিল “রাজনীতি হচ্ছে মানুষকে দেওয়ার জন্য, পাওয়ার জন্য নয়।”
কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে এসে সন্ত্রাসী, চোরাকারবারী, কালোবাজারী, ঘুষখোরদের রাজনীতিতে টেনে এনে কালোটাকাকেই রাজনীতির চালিকা শক্তিতে পরিনত করেছে এবং রাজনীতি থেকে সকল প্রকার নীতি আদর্শ ঝেটিয়ে বিদায় করে প্রতিষ্ঠিত করেছে নীতিহীন এক রাজনীতি। এই অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
খ। ভারতে বসে স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে এবং ১৯৮১ সালের ৩০শে মে তা বাস্তবায়িত করার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
গ। ১৯৮২ সালে, জনগন কর্তৃক নির্বাচিত বিএনপি সরকার উৎখাত করে সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
ঘ।
সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদকে হাতের মুঠোয় রাখার জন্য ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে , ছাত্র আন্দোলনের নামে, ‘৮৩-র মধ্যে ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাফর ও জয়নাল এবং ‘৮৪-র ফেব্রুয়ারীতে সেলিম ও দেলোয়ার হত্যার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
ঙ। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পন্ড করার জন্য হিন্দু-মুসলমান রায়ট লাগিয়ে দেওয়ার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
চ। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত, আন্দোলনের ইস্যু তৈরী করার জন্য ঢাকা শহরে ১০৩ জন নিরীহ অজ্ঞাতনামা সাধারণ মানুষকে খুন করার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
তবে আর দেরি কেন? এখনই ডাউনলোড করুন। ক্লিক করুন- এখানে।